বরিশালে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে সায়েম আলম মিমু নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন ও ১০ বছরের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। এ সময় আদালতে আসামির উপস্থিতি ছিলেন।
দন্ডপ্রাপ্ত সায়েম আলম নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের নগরড়া গ্রামের সেলিম আলমের ছেলে। আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, ধর্ষণের দায়ে সায়েমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চুরির কারণে পাঁচ বছরের কারাদ- এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়া হয়। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট বরিশালের চকবাজারের হোটেল ফেয়ারস্টারে এ ঘটনা ঘটে।
নগরীর মুসলিম গোরস্থান রোডের বাসিন্দা নাঈমা ইব্রাহিম ঈশীর মরদেহ এই হোটেলের ৩০৯ নম্বর কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার সূত্র ধরে পুলিশ ওই হোটেলের মালিক আব্দুর বিশ্বাস এবং ম্যানেজার মজিবুর রহমান আকনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যানুসারে ফেসবুক প্রেমিক সায়েমকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই হোটেলের ৩০৯ নম্বর কক্ষ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেওয়া হয়। এরপরে ঈশীকে ধর্ষণ করে মোবাইলফোন ও ফেসবুকের সূত্র ধরে প্রেমিক বনে যাওয়া সায়েম।
ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হোটেলের ওই কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মাহত্যা করেন ঈশী। এ সময় তার মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে সায়েম পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর অসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ করে দেওয়ায় হোটেল মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
১৯ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে হোটেল মালিক ও ম্যানেজারের সঙ্গে ঘটনার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদেরকে খালাশ দেন। আর সায়েমের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আদালত এ রায় দেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর ফয়জুল হক ফয়েজ বলেন, ‘এই রায়ের মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হলো অপরাধ করে কেউ রক্ষা পায় না’। আর একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা বলেন, ‘উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকুক’।